মিরসরাই উপজেলার জোড়ালগঞ্জ বাজারের পান দোকানি শারীরিক প্রতিবন্ধী ইমাম হোসেনের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিলো একটি হুইলচেয়ারের। অভাব অনটনের মধ্যে সংসারে যেখানে খেয়ে পরে বেঁচে থাকা দায়, সেখানে সাধ থাকলেও সাধ্য ছিলো না হুইলচেয়ার কেনার। শারীরিক অক্ষমতা আর দারিদ্রতার কষাঘাতের মধ্যেও তিনি সমাজের বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার মানুষের কাছে একটি হুইলচেয়ারের সহযোগিতা চেয়েও তা জোটেনি।

একসময় অচেনা এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে ইমাম হোসেন জানতে পারেন চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার মানবিক ওয়াহিদ হাসানের কথা। অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে গত ৮ মে সকালে ছুটে আসেন পতেঙ্গায়। তার বিশ্বাস ছিলো কখনো খালি হাতে ফিরে যাবে না।

একটি হুইলচেয়ারের জন্য ইমাম হোসেন মিরসরাই থেকে খুব ভোরে ছুটে এসেছেন পতেঙ্গায়। বিষয়টি জানার পর ওয়াহিদ হাসান তাকে নিরাশ করেননি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি হুইলচেয়ার ইমাম হোসেনকে উপহার দেন ওয়াহিদ হাসান।

বলছি চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি সাবেক সদস্য ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্র লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ হাসানের কথা।

ওয়াহিদ হাসান করোনা কালীন যখন অক্সিজেনের অভাবে যখন মানুষ প্রান বাঁচাতে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছিল তিনি তখন “পতেঙ্গা অক্সিজেন সাপোর্ট সেন্টার” প্রতিষ্ঠা করে বহু মানুষের প্রান বাঁচিয়েছেন।
করোনাকালীন সময়ের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন করোনার প্রথম দিকে কঠিন লক ডাউনে ২৫ জন লেবারের ১০ দিনের ২ বেলা ভাতের দায়িত্ব নিয়ে ছিলেন। লকডাউনে আটকা পড়া বহু পরিবারের কাছে ব্যক্তিগত ভাবে সব ধরনের খাবার পৌছানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।

ওয়াহিদ হাসান একজন প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ী।এসব মানবিক কর্মকান্ড তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কখনো দানশীল মানুষকে সম্পৃক্ত করে এসব মানবিক কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে মানুষের বিশ্বাস আর ভালোবাসা অনুপ্রেরণা।

ছাত্র জীবন থেকে তার মানবিক কাজ করে যাওয়ার ঝোকের কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান ,ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকাকালীন একবার বড় ভাইয়ের পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে উল্টো গরীব দেনাদারের বোনের বিয়ের যাবতীয় দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়েছিল। ইচ্ছে থাকলে যে কোন ভালো কাজ করা সম্ভব।

কখনো নিজে কখনো মানবিক কাজে উৎসাহীদের সম্পৃক্ত করে। বর্তমান সময়ে বহু তরুন একত্রিত হয়ে বিভিন্ন নামে মানবিক সংগঠন তৈরী করে মানবিক কাজ করে যাচ্ছে।

সম্প্রতি অসহায় মহিলার ঘর নির্মানসহ একের পর এক মানবিক কর্মকার্ন্ডের জন্য এলাকার প্রিয় মুখ হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে তার সুনাম । শুধু তাই নই মানবিক ওয়াহিদ হাসানের আহ্বানে কিডনি রোগী ফয়সাল ও সুমনের দুটো পরিবারকে বাঁচাতে দেশে ও দেশের বহিরে বিভিন্ন স্থান থেকে আর্থিক সহযোগীতার পিছনে নিরলস প্রচেষ্টার চালিয়ে গেছেন তিনি।

ওয়াহিদ হাসান বলেন, দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। ব্যাক্তিগত উদ্যোগে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি আমি সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি যা অব্যাহত রয়েছে। অসহায় মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে খুব ভালো লাগে। সকলের সহযোগীতায় আর আমার সামান্য চেষ্টায় বেশ কয়েকটি পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া ও সাফল্য মনে করি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।