স্বামীকে বিদেশ পাঠানো ও নগদ বিশ হাজার টাকার লোভে ব্যবসায়ীকে গ্যাং ধর্ষন মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন কহিনুর বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধু।
অভিযুক্ত কহিনুর নোয়াখালী হাতিয়ার আমতলীর মৃত নুরুর হকের মেয়ে। সে নগরের চান্দগাঁও কাপ্তাই রাস্তার মাথা ধুপকুল এলকায় থাকেন।
বৃহস্পতবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বাকলিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চত করেছেন সিএমপির দক্ষিণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা।
তিনি বলেন, গত বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেডেকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় বাকলিয়ার নোমান কলেজ রোডে গ্যাং ধর্ষনের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধু। তিনি চমেকের ওসিসিতে চিকিৎসাধীন আছেন। পরে গৃহবধু কহিনুর বেগম পুলিশের কাছে মামলা করতে এসে পতেঙ্গার ব্যবসায়ী মুসা আলমসহ তিনজনের নাম বলেন। ঘটনার সাথে অজ্ঞাত আরও তিনজন জড়িত আছেন বলে জানায়। এঘটনায় তাৎক্ষতিক অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটকও করা হয়। পরে গৃহবধুর এলোমেলো কথায় সন্ধেহ হয় বাকলিয়া থানা পুলিশের। তাকে জিজ্ঞাবাদ করা হলে একপর্যায়ে স্বীকার করে ঘটনাটি সাজানো।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা আরও বলেন, এবিষয়ে গৃহবধু কহিনুর বেগম স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ব্যবসায়ী মুসার আলমের প্রতিপক্ষ একজনের সাথে তাদের চুক্তি হয়েছে। মামলার পর তিনি নিজ খরচে স্বামীকে বিদেশ পাঠাবেন এবং গৃহবধুকে নগদ ২০ হাজার টাকা দিবেন। এই লোভে ব্যবসায়ী মুসাকে ফাঁসাতে স্বামী-স্ত্রী মিলে গ্যাং ধর্ষনের নাটক সাজান।
এসময় অভিযুক্ত গৃহবধু কহিনুর বেগম জানান, স্বামীর পরিচিত একজনের কথায় তারা ব্যবসায়ী মুসা আলমকে ফাঁসানোর নাটক তৈরী করেছে। ওই ব্যক্তি নিজ খরচে স্বামীকে বিদেশ পাঠাবেন এবং তাদেরকে নগদ ২০ হাজার টাকা দিবেন বলে চুক্তি হয়। তবে তিনি ওই লোকের নাম জানেন না বলে জানান।
ভুক্তভোগী মুসা আলম জনতার চট্টগ্রামকে বলেন, সম্পুর্ণ পরিকল্পিত ভাবে সমাজে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার পাশাপাশি আমার দীর্ঘ দিনের সুনাম নষ্ট করার জন্য এ নাটকটি সাজানো হয়েছে।
আমি সী বিচ কমিউনিটি পুলিশিং ও পতেঙ্গা সমূদ্র সৈকত সী বিচ স্পীটবোড মালিক সমিতির সেক্রেটারী।
সী বিচে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দোকান মালিকদের কাছ থেকে হকার সমিতির নামে নুর মোহাম্মদগং চাঁদাবাজি করে আসছে। আমি বরাবরের মতো তাদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে । এ ঘটনায় নুর মোহাম্মদের ছেলে মাসুদ, হারুন ও ইসমাইল নামের তিনজন ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। তারা বেশ কিছুদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে নানান অপ-প্রচার চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সাথে যেই জড়িত থাকুক, আমি চাই তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। আমি অভিযুক্ত গৃহবধুসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বাকলিয়া থানার অপারেশন অফিসার সাজেদ কামাল বলেন, অভিযুক্ত গৃহবধু পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ভুক্তিভোগী মামলা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।