মনিকা শর্মা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল নারী-পুরুষের সমান অধিকার। কিন্তু আমাদের সমাজে এখনো নারীরা অবহেলিত। রাষ্ট্রের অনেক উচ্চপদে নারীরা কাজ করছেন এটি সত্য, কিন্তু সামগ্রিকভাবে নারীরা অবহেলা ও অবজ্ঞার শিকার হচ্ছেন। আমাদের সমাজে কিছু মানুষ রয়েছেন, তাঁদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনা গেলে সমাজেও পরিবর্তন আসবে। নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে সমাজকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। বিশেষ করে নারীকে পশ্চাৎপদ করে রাখলে দেশের কাঙ্খিত অগ্রযাত্রা সম্ভব হবে না। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, রাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রে পুরুষের মতো নারীকেও সমানভাবে বিবেচনা করতে হবে। আমাদের সমাজের অর্ধেক নারী। তবে প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করছেন। এ কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে এখন নেতৃত্বের আসনে রয়েছেন নারীরা। সমাজের অবশিষ্ট নারীদের অবস্থা নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ তাঁরা এখনো অবহেলা-অবজ্ঞার শিকার হচ্ছেন।

একথা সত্য যে, নারীরা এখন সেই অবলা নারী নেই। নারীরা সাবলম্বী, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে দিনে দিনে। নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াতে শিখেছেন। আমি কোন পুরুষকে অর্মযদা করছি না এবং কোন নারীকে ও উপরে তুলছি না। আমি মনে করি নারী এবং পুরুষ উভয়ই সমান। একটা পুরুষের সাথে তার স্ত্রী, মা,বোন মেয়ে কারো সাথে মনের গড়মিল হতে পারে, সেই জন্য তো সব নারী একই রকম নয়।আবার একজন নারীর সাথে তার স্বামী, বাবা, ভাই, ছেলে কারো সাথে মনের গড়মিল হতে পারে সেই জন্য তো সব পুরুষ একই রকম নয়। একজন পুরুষের স্ত্রী যদি খারাপ হয় তাহলতো নিজের স্ত্রীর সাথে অন্য নারীদের এক মনে করা যেমন ঠিক না, তেমনি নারীকে সবসময় অমর্যদা করা ও ঠিক নয়। এখন একটা কথা হলো আমার এক দাদার বক্তব্য নারীরা নাকি পুরুষের টাকা ছাড়া কিছুই চিনে না এটা আমার এক বড়ো ভাইয়ের সবসময়ই কথার ভাষ্য আসলে কি তাই। ঘটনা কতটুক সত্যি আমার জানা নেই।তবে আছে কিছু মানুষ আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক। নারীরা যদি এতো অবহেলিত হবে তাহলে একজন নারী ইচ্ছে করলে সে সারা জীবন একা থাকতে পারে তেমনি একজন পুরুষ ও ইচ্ছে করলে সারা জীবন একা থাকতে পারে কিন্তু একজন নারীর ইচ্ছে হলে সে পুরুষকে ছাড়া মা হতে পারবে কিন্তু একজন পুরুষ কি ইচ্ছে করলে কোন দিন যুগযুগ তপস্যা করেও নারী ছাড়া বাবা হতে পরবে? পারবে না। আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন?একজন নারী সন্তান জন্ম দেওয়ার পর সে সন্তানকে ছয় মাস নিজের বুকের দুধ খাইয়ে রাখতে পারবে, কিন্তু একজন নারী সন্তান জন্ম দেওয়ার পর যদি মা মারা যায়, আর তাহলে যদি একজন বাবাকে তার নিজের সন্তানকে কোলে দিয়ে বলা হয় ২৪ ঘন্টার জন্য বাবার অস্তিত্ব দিয়ে শুধু ২৪ ঘন্টা তার সন্তানকে নিজের শরীরের কোন ক্ষমতায় তার সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে তাহলে কি সেই বাবা পারবে নিজের রক্ত মাংসের অস্তিত্ব দিয়ে তার সন্তানকে বাচিয়ে রাখতে, নিশ্চয়ই পারবে না।আমার মূল কথা হলো আমরা নারীরা নারীরা কি মনের অনেক গড়মিল হয় না।এবং পুরুষে পুরুষে কি মনের অনেক গড়মিল হয় না। তবে কেন নারীদের কথাটা সমাজে বারবার চলে আসে নারী জাত খারাপ। আমার এক রিলেটিভ সে এক সমাজের মধ্যে বলে ফেলছে স্বামীরা স্ত্রীদের খায়োন পরোন দেয় তাই স্ত্রীকে যখন তখন নাকি লাথি চোপড় দেয়া যায়। বলেন মানুষের মন-মানসিকতা কোথায়। ধিক সেই পুরুষদের যারা একজন নারীর সাথে তুলনা করে সব নারীকে এক মনে করে, আর যারা এই কথাগুলো শুনে ও না শোনার মতো বসে থাকে এবং কোন প্রতিবাদ করে না। ধিক সেই নারীদের যারা একজন পুরুষের জন্য সব পুরুষদের অমর্যদা করে। শুধু একজন নারী এবং একজন পুরুষের সাথে সব নারী পুরুষের বিচার করা কোন রকমের ঠিক না। আমি আবার ও বলছি একজন পুরুষের মধ্যে আমার বাবা,ভাই স্বামী, সন্তান রয়েছেন এবং একজন নারীর সাথে আমার মা,বোন, আমি, আমার মেয়ে রয়েছেন। একজনের সাথে অন্যের তুলনা করা বেমানান। তাই আসুন আমরা সবাই নারী পুরুষের বিভেদ ভুলে একই সূত্রে গাঁথা এই মন করে হৃদয় মুক্তোর মালার মতো গেঁথে রাখি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।